পুলিশের অনুসন্ধান

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ৯৮ শতাংশ ঘটনা রাজনৈতিক কারণে


Desk News প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ১১, ২০২৫, ৯:৪২ অপরাহ্ন /
সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ৯৮ শতাংশ ঘটনা রাজনৈতিক কারণে

শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘিরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের ১ হাজার ৪১৫টি অভিযোগের মধ্যে ৯৮ দশমিক ৪ শতাংশই হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রদায়িক কারণে। ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত এসব ঘটনা নিয়ে পুলিশের অনুসন্ধানে এই তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পুলিশের অনুসন্ধানের এ তথ্য এক বার্তায় গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের অভিযোগ, ৪ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ১০টি। পুলিশ জানিয়েছে, এসব ঘটনার মধ্যে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ এসেছে ১ হাজার ৭৬৯টি।

পুলিশ জানিয়েছে, ১ হাজার ৭৬৯টি অভিযোগের মধ্যে ১ হাজার ৪১৫টি অভিযোগের অনুসন্ধান করে তারা। বাকি ৩৫৪টির অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান করা অভিযোগগুলোর মধ্যে ১ হাজার ২৫৪টির সত্যতা পাওয়া গেছে। বাকি ১৬১টির সত্যতা পাওয়া যায়নি। যে অভিযোগগুলো সত্যতা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ১ হাজার ২৩৪টি (৯৮ দশমিক ৪%) ঘটনাই ঘটেছে রাজনৈতিক কারণে। ২০টি (১ দশমিক ৫৯%) ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রদায়িক কারণে।

পুলিশের অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, ১ হাজার ৪১৫টি অভিযোগ অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট স্থান, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং প্রত্যেকটি স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ৬২টি মামলা এবং ৯৫১টি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

পুলিশের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যমতে, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ১ হাজার ৭৬৯টি অভিযোগের মধ্যে গত বছরের ৫ আগস্ট এক দিনেই ১ হাজার ৪৫২টি ঘটনা ঘটেছে। যা মোট অভিযোগের ৮২ দশমিক ৮ শতাংশ। ওই দিন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছিল।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অন্যান্য অভিযোগ সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, ৫ আগস্ট থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশজুড়ে পুলিশের কাছে আরও ১৩৪টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ জমা পড়ে। পুলিশ এগুলো গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে ৫৩টি মামলা ও ৫৩টি সাধারণ ডায়েরি নথিভুক্ত করে এবং ৬৩ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে।

শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার পদক্ষেপের বিষয়ে পুলিশ জানায়, সরকার সব ধর্মীয়, জাতিগত ও সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সংবিধান ও আইন সংখ্যালঘুদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ-নির্বিশেষে দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে অভিযোগ গ্রহণের জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছে। সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরাও অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। এ ছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ অভিযোগ এলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।