স্থলবন্দর হয়ে তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে ভারত নতুন করে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার প্রতিক্রিয়ায় ‘পাল্টা কোনো পদক্ষেপ’ না নেওয়ার কথা বলেছে ঢাকা। মঙ্গলবার সচিবালয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠক শেষে ঢাকার এ অবস্থান তুলে ধরেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সচিব বলেন, “আজ আমরা এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে বসেছিলাম; তাদের মতামতটা নিলাম। পরিস্থিতির যেন আর অবনতি না হয়, সেজন্য আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে।”
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শুনলাম। এটা আমরা আমাদের নীতি নির্ধারক ও সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করব। “আমরা কোনো ধরনের রিটেলিয়েট (পাল্টা) কর্মসূচি নেব না, তারা এটা করেছে, আমরা তাদের সঙ্গে এনগেইজ হব।” এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দুই দেশের ব্যবসায়ীদের জন্যই ‘ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্য সচিব। সমস্যা সমাধানে দুই দেশের মধ্যে সচিব পর্যায়ে একটি বৈঠক আয়োজনের চিন্তার কথাও বলেন তিনি।
“আমরা বলব, এতে করে শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাই, আপনাদের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কাজেই আসুন আমরা বসি, একটা সুরাহার পথ বের করি। ভারতের সঙ্গে আমাদের সেক্রেটারিয়েট পর্যায়ের একটা এস্টাবলিস্ট ফোরাম আছে। বৈঠকের জন্য গত সপ্তাহে আমরা একটা চিঠি পাঠিয়েছি। সেই চিঠির উত্তর এলে আমরা বুঝতে পারব যে কবে বসা যায়।”
বৈঠকে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি ছিলেন।
এছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশি পণ্যে ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাটি আসে শনিবার। সেখানে বলা হয়, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কোনো ধরনের পোশাক পণ্য ভারতে ঢুকতে পারবে না।বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কেবল কলকাতা ও মুম্বাইয়ের নভসেবা (জওহরলাল নেহরু) সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে।
ফল, ফলের-স্বাদযুক্ত পানীয় ও কার্বোনেটেড ড্রিংকস; বেকারি, চিপস, স্ল্যাকস এবং কনফেকশনারিতে তৈরি প্রক্রিয়াজাত খাবার; তুলা ও সুতার ঝুট; পিভিসিসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য এবং কাঠের তৈরি আসবাবপত্রও বিধিনিষেধের আওতায় পড়েছে।
আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের কোনও ‘ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন’ বা ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ (আইসিপি) দিয়ে এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন দিয়ে এসব পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। ভারতের এ ঘোষণার পরের দিন বিভিন্ন স্থলবন্দরে বাংলাদেশি পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে। এর মধ্যে ৩৬ ট্রাক পোশাক আটকরা পড়ে বেনাপোল বন্দরে।
আপনার মতামত লিখুন :