সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্ক-সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীর মাঝে লড়াইয়ে শতাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। গত দুই দিনে দেশটির উত্তরাঞ্চলে সংঘাতে এই যোদ্ধারা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সিরিয়ার মানবিজ শহরের আশপাশের কয়েকটি গ্রামে গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১০১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে তুরস্ক-সমর্থিত গোষ্ঠীর ৮৫ সদস্য ও কুর্দি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) ১৬ সদস্য রয়েছেন।
গত ২৭ নভেম্বর ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের নেতৃত্বাধীন অভিযান শুরুর মাত্র ১১ দিনের মাথায় ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন ঘটে।
আসাদের পতনের পরপরই উত্তর সিরিয়ায় তুর্কি-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো আবারও এসডিএফের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। তুরস্ক-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো এসডিএফের কাছ থেকে উত্তর আলেপ্পো প্রদেশের মানবিজ এবং তাল রিফাত শহরের দখল নিয়ে নেয়। তখন থেকে উত্তর সিরিয়ায় প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষ চলছে। এতে উভয়পক্ষের ব্যাপক হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। তবে এক বিবৃতিতে এসডিএফের দাবি, তারা তুরস্কের ভাড়াটে সৈন্যদের তুর্কি ড্রোন ও বিমান ব্যবহার করে চালানো সব হামলা প্রতিহত করেছে।
অবজারভেটরির প্রধান রামি আবদেল রহমান বলেছেন, তুর্কি-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো রাক্কায় যাওয়ার আগে কোবান এবং তাবকা শহরের দখল নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এসডিএফ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বের বিস্তীর্ণ এলাকা এবং পূর্বে দেইর ইজোর প্রদেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধের শুরুর সময় ওই অঞ্চল থেকে সরকারি বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরে কুর্দিরা সেখানে স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করে।
মার্কিন সমর্থন পাওয়া এই গোষ্ঠীটি বর্তমানে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাছ থেকে দখল ছিনিয়ে নেওয়ার পর রাক্কাসহ ওই অঞ্চলের বেশিরভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আঙ্কারা এসডিএফকে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) অনুসারী বলে মনে করে; যারা দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে এক দশক ধরে বিদ্রোহ করছে। তুরস্কের সরকার এই গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :