মিলন হোসেন বেনাপোল,
যশোর কোতোয়ালি থানায় চার সাবেক সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি এবং এক যুবককে গুলি করে পঙ্গু করার অভিযোগে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযোগটি করেন যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া রহিমপাড়ার মৃত রমজান মোল্যার মেয়ে ও মৃত আছমত মোল্যার স্ত্রী নুরজাহান বেগম খুকি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে কোতোয়ালি থানায় কর্মরত সাবেক এসআই জামান, এসআই শোয়েব, এসআই শেখ আজগর এবং বর্তমানে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ আমির আব্বাস, ওই এলাকার এক যুবক মজনুকে আটক করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা মজনুর বাম হাঁটুর ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে দুই রাউন্ড গুলি করেন।
গুলি করার পর মজনুকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দীর্ঘ চিকিৎসার পরও ক্ষতস্থানে পচন ধরায় মজনুর বাম পা হাঁটুর ওপর থেকে কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।
মজনুকে গুলি করার পাশাপাশি ওই চার সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখান এবং জেল হাজতে প্রেরণ করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর মজনু চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যান।
বাদি নুরজাহান বেগম অভিযোগ করেন, তৎকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পুলিশের প্রভাবের কারণে তিনি মামলা করতে পারেননি। থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ফলে তিনি যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়ার আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন।
মামলায় দাখিল করা হয়েছে মজনুর চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্র ও জখমী সনদ। বাদি আরও উল্লেখ করেন, চাঁদার টাকা না পেয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এই নির্মম ঘটনা ঘটান।
মামলাটি নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ন্যায়বিচারের দাবিতে তারা মামলাটির সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :