
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ তুলে ধরে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, মানুষের মধ্যে কতটুকু ঘৃণা আর ক্রোধ সঞ্চারিত হলে পুলিশ থানা ছেড়ে পালায়। এমনটা ১৫০ বছরে হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামের সময়ও পুলিশকে পালাতে হয়নি উল্লেখ করে পুলিশপ্রধান বলেন, এত বড় একটা যুদ্ধ, তার মধ্যেও তো আমাদের পালাতে হয়নি। এর মধ্যে কেন জুলাই-আগস্টে আমাদের পালাতে হলো, কী পরিমাণ ঘৃণার সঞ্চার হয়েছিল মানুষের মধ্যে যে আমরা কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছি গত ১৫ বছর; এই জায়গায় আমার মনে হয় আত্মানুসন্ধান করি।’ তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দলগুলো পুলিশকে এ থেকে বের করে নিয়ে আসবে।
পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক ও কার্যনির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়ার দাবি তুলেন আইজিপি বাহারুল আলম। এসময় গত এক বছর পুলিশপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বাহারুল আলম।
তিনি বলেন, গত নভেম্বর থেকে আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময়টা মোটেই সুখকর নয়। আমাকে প্রবল প্রতিকূলতার মধ্যেই শুরু করতে হয়েছে এবং আমাকেও মাঝেমধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কি আমাদের লোক?’ ধারাবাহিকভাবে এমন কথা শুনতে হয় বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক সরকারই দেশ চালাবে এবং তারাই অভিভাবক উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, উনারাই (রাজনৈতিক সরকার) তো আমাদের অভিভাবক, আমি মনে করি; সে জায়গাটায় কেন আমি যেতে পারছি না এবং সে ভয় থেকেই আমরা (পুলিশ) বলি, আমাকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, কার্যনির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত করে একটা ইনডিপেনডেন্ট বডির আন্ডারে (স্বাধীন বিভাগের অধীন) আমাকে নিয়ে যান, ওই ভয় থেকেই; ওই আস্থাটা কেন আমি পাচ্ছি না যে ওনারাই করবেন। ওনারা দেশ চালাবেন, কিন্তু ওনারা কোনো প্রভাব বিস্তার করবেন না, সে জায়গাটায় কবে যাব আমি?
পুলিশকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাহারুল আলম বলেন, মামলা তদন্তের ক্ষেত্রে, গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে এই জায়গায় যেন আমার কাছে কোনো নির্দেশনা না আসে।’ বিধান অনুযায়ী পুলিশ বাহিনীকে পরিচালনার স্বাধীনতা দেওয়ার দাবিও জানান তিনি। এ ছাড়া পুলিশের ওপর সরকারের কর্তৃত্ব কমানোর দাবিও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :