ঘোড়াঘাটে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দৌরাত্ম্য


Desk News প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ৩:২৯ অপরাহ্ন /
ঘোড়াঘাটে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দৌরাত্ম্য

ফাহিম হোসেন রিজু
ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে বেশ কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারের কঠোর নিয়ম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের নেই প্রয়োজনীয় লাইসেন্স, নিবন্ধন বা যোগ্য টেকনোলজিস্ট। ফলে স্বাস্থ্যসেবা নয়, বরং রোগীর জীবন নিয়ে চলছে চরম ঝুঁকিপূর্ণ বাণিজ্য।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় অসংখ্য ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে উপজেলার হাট-বাজারে অনুমোদনবিহীন এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাই বেশি। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের কোনো ধরনের কাগজপত্র নেই—নেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন, নেই বিএমডিসি নিবন্ধনপ্রাপ্ত ডাক্তার, নেই সনদপ্রাপ্ত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। এমনকি অনেক প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে স্টেরিলাইজড পর্যন্ত করা হয় না।

অথচ প্রতিদিনই এসব কেন্দ্রে শত শত রোগীর রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি, এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করা হচ্ছে। রিপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম-নীতির অনুসরণ না করায় ভুল রিপোর্ট পাওয়ার ঘটনাও বেড়েই চলছে বলে রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ। ভুল রিপোর্টের কারণে অনেক সময় রোগ নির্ণয়ে বড় ধরনের জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

আইন অনুযায়ী একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স, নিবন্ধিত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, বিএমডিসি নিবন্ধনপ্রাপ্ত ডাক্তার, ট্রেড লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সেফটি সার্টিফিকেট এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। কিন্তু ঘোড়াঘাটের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এসব কাগজপত্রের কোনো অস্তিত্বই নেই।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে যেভাবে অনুমোদনহীন সেন্টারের বিস্তার ঘটেছে, তাতে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তাদের অভিযোগ—প্রশাসনের নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান দাপটের সঙ্গেই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে দ্রুত বন্ধ করে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি। তারা মনে করেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে এসব অনিয়ম আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।